রাজবাড়ী প্রতিনিধিঃ
রাজবাড়ীতে রাজশাহীর বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি ও মানহানিকর বক্তব্য প্রদান করায় ঘটনায় করা মামলায় জামিনের আবেদন না মঞ্জুর করেছেন আদালত। রাজবাড়ীর ২ নম্বর আমলী আদালতের বিচারক সুধাংশ শেখর রায় বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এই আদেশ দেন।
২৪ মে রাজশাহী জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সাঈদ চাঁদকে প্রধান আসামী করে মোট পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৩০ জনের নাম উল্লেখ করে রাজবাড়ী- ২ নম্বর আমলী আদালতে মামলাটি দায়ের করা হয়।
মামলার বাদীর নাম শেখ সোহেল রানা টিপু। তিনি রাজবাড়ী জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং মামলার দ্বিতীয় বাদী মোঃ জালাল বিশ্বাস, তিনি পাংশা উপজেলা পরিষদের ভাইসচেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক।
মামলার অন্যান্য আসামীরা হলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ও সাবেক সংসদ সদস্য নাদিম মোস্তফা।
মামলার বলা হয়, ১৯ মে রাজশাহী জেলা ও মহানগর বিএনপির উদ্যোগে বিকেলে পুঠিয়া উপজেলার শিবচর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। আসামীরা বিকেল ৩টা ৫০ মিনিট থেকে বক্তব্য দেওয়া শুরু করেন। এক নম্বও আসামী বক্তব্যের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে উস্কানীমূলক ও মানহানীকর বক্তব্য দিতে শুরু করেন। এক নম্বও আসামী বলেন, ‘আর ২৭ দফা, ১০ দফার মধ্যে আমরা নাই, এক দফা শেখ হাসিনাকে কবরস্থানে পাঠাতে হবে, শেখ হাসিনাকে কবরস্থানে পাঠাতে হবে এবং শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করানোর জন্য যা যা করা দরকার আমরা তা করবো ইনশাআল্লাহ’। ওই দিনই বিভিন্ন ইলেকট্রনিক প্রচার মাধ্যমে অনলাইনে দেখতে পেয়ে মর্মাহত ও আতঙ্কিত হন। এতে জেলা আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীসহ জনমনে আতঙ্ক ও ভয়ের সৃষ্টি হয়। আসামীর বক্তব্যে সারা বাংলাদেশে অরাজকতা সৃষ্টিসহ অখন্ডতা, সংহতি, জননিরাপত্তা বিপন্ন ও বড় ধরনের নাশকতামূলক কর্মকান্ড ঘটতে পারে যা রাষ্ট্রদ্রোহিতার সামিল। বাদী রাস্তায় বের হলে মানুষ উক্ত বক্তব্য নিয়ে হাস্যকর বক্তব্য প্রদান করছে ও বাদীর মানহানী প্রদান করছে। এতে বাদীর দুই কোটি টাকার মানহানী হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, দুপুর ১২টার দিকে তাকে আদালতে উপস্থিত করা হয়। তাঁর হাতে ছিল হাতকরা। কোমড়ে ডান্ডাবেরি। আদালতে বিএনপির আইনজীবীরা তাঁর জামিনের আবেদন করেন। সরকার পক্ষের আইনজীবীরা জামিনের বিরোধীতা করেন। বিচারক জামিনের আবেদন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগাওে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আসামীপক্ষের আইনজীবী ও জেলা বিএনপির আহবায়ক লিয়াকত আলী বলেন, আসামীর বয়স ৭৩ বছর। তাকে ডান্ডাবেরি পড়ানো হয়েছে। এটা খুব অমানবিক। কারণ যাদের পালিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে তাদের ডান্ডাবেরি পড়ানো হয়। কিন্তু তিনি রাজনীতিবিদ। পালিয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমরা এভাবে ডান্ডাবেরি পড়ানোর ধিক্কার জানাই।