রাজবাড়ী প্রতিনিধিঃ
রাজবাড়ী জেলা কারাগারের এক কয়েদী মঙ্গলবার সকালে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। পরিবারের অভিযোগ, চিকিৎসায় অবহেলার কারণে তিনি মারা গেছেন।
মৃত কয়েদির নাম শহিদুল ইসলাম (৪৩)। বাড়ি রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নের বহরপুর গ্রামে। শহিদুলের বাবার নাম আবুল বিশ্বাস।
রাজবাড়ী জেলা কারাগার সূত্রে জানা যায়, শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে একটি মামলায় গ্রেপ্তার পরোয়ানা ছিল। ২০২৩ সালের ১৯ মে আদালত শহিদুলকে কারাগারে পাঠায়। পরে তার এক বছরের সাজা হয়। কয়েদী হিসেবে তিনি কারাগারে ছিলেন। মঙ্গলবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে শহিদুল ইসলাম বুকে ব্যাথা অনুভব করেন। তাকে প্রথমে জেলা কারাগারের হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়। কিন্তু তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়নি। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
নিহত শহিদুল ইসলামের ছোট ভাই রেজাউল বিশ্বাস বলেন, আমার ভাইয়ের কোন অসুখ ছিল না। তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ ছিলেন। আমরা ১৫ দিন পরপর ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করি। আজও ভাইয়ের সঙ্গে আমাদের দেখার করা কথা ছিল। সকালে আমাদের কাছে ফোন করে বলা হয় আমার ভাই অসুস্থ। তাকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আমরা খবর পেয়ে দ্রুত হাসাপতালে ছুটে আসি। হাসপাতালে এসে দেখি আমার ভাই মারা গেছে। হাসপাতালের মর্গে আমার ভাইয়ের লাশ রেখে দেওয়া হয়েছে।
তিনি অভিযোগ করেন, আমাদের জানা মতে ভাইয়ের কোন শারীরিক সমস্যা ছিল না। যথাসময়ে তাকে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হলে আজ এমন ঘটনা ঘটতো না। চিকিৎসার অভাবে তার ভাই মারা গেছেন। আমরা এর বিচার চাই।
রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের দায়িত্ব পালনরত চিকিৎসক ওমর ফারুক পাটোয়ারী বলেন, সকাল ৬টা ১০ মিনিটে অসুস্থ অবস্থায় শহিদুলকে হাসপাতালে আনা হয়। এসময় তিনি ছটফট করছিলেন। হাসপাতালে আনার অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। প্রাথমিক ধারণা করা হচ্ছে, হার্ট অ্যাটাকের কারণে তিনি মারা গেছেন।
রাজবাড়ী জেলা কারাগারের জেল সুপার মোহাম্মদ আবদুর রহিম বলেন, ভোরে জানতে পারি শহিদুল নামে এক কয়েদীর বুকে ব্যাথা হচ্ছে। বিষয়টি জানার পর তাকে প্রথমে জেলা কারাগারের হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। আইনী প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে তার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। আমরা চিকিৎসার ক্ষেত্রে কোন অবহেলা করিনি।