মোঃএনামুল হক:

বেনাপোল স্থলবন্দরের ভারতীয় ট্রাক টার্মিনালে ভয়াবহ অগ্নিকান্ড সংঘটিত হয়েছে। এতে ৫ টি ভারতীয় ট্রাক আমাদানিকৃত পণ্য সহ ভস্মীভূত এক প্যাকেজ আমদানিকৃত ম্যাশিনারী কার্টনে আগুন লেগে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ওই ট্রাকে দাহ্য পদার্থ ব্লিচিং পাউডার ছিল। প্রায় দুই ঘন্টা ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে। অনিয়ম অব্যবস্থাপনার কারনে এরকম অগ্নিকান্ড সংটিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন একাধিক বন্দর ব্যবসায়ীরা।

শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) ভোর ৫ টার দিকে বেনাপোল স্থল বন্দরের ভারতীয় ট্রাক টার্মিনালের মধ্যে এ অগ্নিকান্ড ঘটে। ঘটনাস্থলে বেনাপোল স্থল বন্দরের কর্মকর্তাগন ও পোর্ট থানার ওসি কামাল হোসেন ভূঁইয়া পরিদর্শন করেন।

বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট মুক্তা ট্রেডিং এর সত্বাধিকারী আব্দুল মুন্নাফ বলেন, খামখেয়ালী পনা ও অব্যবস্থার কারনে এরকম অগ্নিকান্ড সংঘটিত হয়েছে। যেখানে অগ্নিকান্ড ঘটেছে সেই স্থানটি একটি টার্মিনাল। এখানে ভারতীয় গাড়ি রাখা হয় বলে নাম হয়েছে ভারতীয় ট্রাক টার্মিনাল। টার্মিনালের মধ্যে রয়েছে আমদানিকৃত অন্যান্য পণ্য। যা রাখার কথা নয়। আবার এসব দাহ্যপণ্য ফাঁকা জায়গায় রাখার কথা থাকলেও তারা এই টার্মিনালের মধ্যে রেখেছে। তিনি আরো বলেন, বেনাপোল স্থলবন্দরের একটি নিজস্ব ফায়ার সার্ভিস টিম রয়েছে। তারা অগ্নি নির্বাপকের কোন কাজ করে নাই। খোজ নিয়ে জানা গেছে তাদের গাড়িতে পানি নেই। এরা আবার বছরের পর বছর বন্দর থেকে বেতন ভাতা ও গাড়ির তেল খরচ নিচ্ছে প্রতিনিয়ত।

তৌহিদুজ্জামান নামে একজন সিএন্ডএফ কর্মচারী বলেন, যতবার এই বন্দরে অগ্নিকান্ড সংঘটিত হয়েছে ততবারই ছুটির দিনে। আজ ও ছুটির দিন। এছাড়া এসব দাহ্য পদার্থ জাতীয় পণ্য কেনই বা এই টার্মিনালে রাখা হয়েছে তাও ক্ষতিয়ে দেখার বিষয়।

স্থানীয় একাধিক সিএন্ডএফ কর্মচারীরা বলেন, ভারতীয় যে সব ট্রাকে এজাতীয় পণ্য আসে তা একদিনের মধ্যে বন্দর থেকে খালাস করে নিয়ে যাওয়ার কথা। তারপরও ওই ট্রাকগুলো প্রায় ১৫ দিন এই টার্মিনালের মধ্যে অবস্থান করছে। ট্রাকের চালক ও হেলপাররা ট্রাকের মধ্যে বসে ধূমপান করে থাকে এবং ট্রাকের নিচে রান্নার কাজ করে। সেখানে থেকেও আগুন লাগতে পারে বলে তারা মন্তব্য করেন।

ফায়ার সার্ভিস কর্মী রইজ উদ্দিন বলেন, কি ভাবে অগ্নিকান্ড ঘটেছে তা এখন বলা সম্ভব না। এটা তদন্ত সাপেক্ষে বলা যেতে পারে।

বেনাপোল বন্দরের ট্রাফিক পরিদর্শক জাহিদুল ইসলাম বলেন, এগুলো দাহ্য পদার্থ । এতে পানি লাগলে আগুন ধরে যায়। তবে বৃষ্টি হয়নি,অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারনে এরকম অগ্নিকান্ড সংঘটিত হতে পারে।
বেনাপোল পোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ কামাল হোসেন ভূঁইয়া বলেন, স্থলবন্দরে অগ্নিকান্ড সংঘটিত হওয়ার পর ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি পুলিশ ও অগ্নিনির্বাপক এর কাজ করছে।

বেনাপোল স্থলবন্দর এর উপ-পরিচালক মামুন কবির তরফদার বলেন, কি ভাবে এই দাহ্য পদার্থে আগুন লেগেছে তা তদন্ত করা হবে। তবে এগুলো যেহেতু দাহ্য পদার্থ অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারনেও আগুন লাগতে পারে। এর আগেও এরকম ঘটনা ঘটেছে বন্দর এলাকায়।