রাজবাড়ী প্রতিনিধিঃ
রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলায় ভ্যান ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে মো. আকাশ মোল্লা (১১) নামের এক শিশুকে হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন এক আসামী।
স্বীকারোক্তি দেওয়া আসামীর নাম সাইদুল বিশ্বাস (২০)। তিনি কুষ্টিয়ার খোকসার আটঘরিড়া গ্রামের বাসিন্দা। সাইদুলের বাবার নাম আবদুল মজিদ বিশ্বাস।
গতকাল মঙ্গলবার তিনি রাজবাড়ীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুমন হোসেনের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাংশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান।
এর আগে হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহতের বাবা সোমবার সন্ধ্যায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামী করে পাংশা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
 শিশুটির নাম মো. আকাশ মোল্লা (১১)। আকাশ সেনগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। আকাশের বাবার নাম নাসির উদ্দিন মোল্লা। তিনি পাংশা উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের সেনগ্রামে শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করতেন। নাসিরের পৈতৃক নিবাস যশাই ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামে।
আদালতের বরাত দিয়ে পাংশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান বলেন, আকাশের বাবা পেশায় ভ্যান চালক। আর্থিক ভাবে অস্বচ্ছল। আকাশ মাঝেমধ্যে তার বাবার ভ্যান চালাতো।  গত শনিবার বিকেলে আকাশ তার বাবার ভ্যান নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়। সেনগ্রামের কালীতলা থেকে দুই যাত্রী নিয়ে পাংশা শহরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। পাংশা থেকে দুইজন যাত্রী নিয়ে ফেরার সময় পথে দুর্গাতলা এলাকায় আকাশের দাদা (নাসিরের চাচা) সঙ্গে দেখা হয়। এসময় আকাশ যাত্রী হিসেবে ভ্যানে বসা ছিল। একজন যাত্রী ভ্যানটি চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি আকাশকে ডাক দেন। কিন্তু আকাশ ডাকে সাড়া দেয়নি।
রাত হয়ে গেলেও আকাশ আর বাড়িতে ফিরে আসেনি। তাকে বিভিন্ন স্থানে অনেক খোঁজাখুঁজি করা হয়। কিন্তু আকাশকে কোথায়ও খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়। পুলিশ সোমবার সকালে সাইদুলকে আটক করে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে এক পর্যায়ে হত্যাকান্ডের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। তাঁর দেওয়া তথ্য মতে, একটি ভুট্টা খেত থেকে শিশুটির হাত-পা বাঁধা অবস্থায় লাশ উদ্ধার করা হয়। তার মুখের ভেতর ভুট্টা ঢুকানো ছিল।
ওসি মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান আরও বলেন, হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহতের বাবা দায়ের করা মামলার আসামী হিসাবে মঙ্গলবার দুপুরে সাইদুলকে রাজবাড়ী আদালতে পাঠানো হয়। বিকেলে তাকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুমন হোসেনের আদালতে পাঠানো হয়। রাত ৮টার দিকে আসামীর দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী গ্রহণ করেন।