রাজবাড়ীতে গতকাল রোববার সকালে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ জেলা কমিটির উদ্যোগে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও স্মারকলিপি পেশ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। শহরের ভবানীপুরে শতবর্ষের ঐতিহ্যবাহী ভোলা মাস্টারের বাড়িতে পুরুষ সদস্যদের সঙ্গে আকস্মিকভাবে নারী সদস্যদের শ্লীলতাহানী, মারধর ও নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে ও শাস্তির দাবিতে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
সকাল ১০টায় প্রেসক্লাবের সামনে সংগঠনের নেতাকর্মীরা জড়ো হন। প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে ঘণ্টাব্যাপি এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের জেলা কমিটির সভাপতি ডা. পূর্ণিমা দত্ত। এতে বক্তব্য দেন ভূক্তভোগি পরিবারের স্বজন তনুশ্রী ঘোষ, মহিলা পরিষদের নেত্রী আইনজীবী দেবাহুতি চক্রবর্তী, সাবেক সভাপতি লাইলী নাহার, অমিতা চক্রবর্তী, বাসন্তী স্যানাল, ক্রিস্টিনা মারিও রেখাদাস। এতে সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করে। মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
বিক্ষোভ মিছিলে ‘নারী নির্যাতন বন্ধ করো করতে হবে, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা নাও নিতে হবে, নারীদের ওপর হামলা কেন প্রশাসন জবাব চাই, নারীদের ওপর হামলাকারীদের বিচার চাই করতে হবে, নারীদের নিরাপত্তা দিতে হবে দিতে হবে’ প্রভৃতি স্লোগান দেওয়া হয়।
বক্তারা বলেন, শহরের ঐতিহ্যবাহী মজুমদার বাড়ি তথা ভোলা মাস্টারের বাড়ি শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। হামলাকারীরা বাড়ির প্রাচীর ভেঙেছে। বাড়ির পুরুষ সদস্যদের পাশাপাশি নারী সদস্যদের মারধর করা হয়েছে। তাদের ব্লাউজ, পেডিকোট ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। গায়ে হাত তোলা হয়েছে। বাঁশের লাঠি, লোহার রড, কাঠের চেলা দিয়ে পিটানো হয়েছে। তাদের গালাগাল করা হয়েছে। আরও নির্যাতন করার হুমকি দেওয়া হয়। আহতের মধ্যে দুইজন এখনো হাসপাতালে ভর্তি আছে।
জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্বরে জেলা প্রশাসক আবু কায়সার খানের কাছে স্মারকলিপি পেশ করা হয়। এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সুবর্ণা রানী সাহা উপস্থিত ছিলেন। এরপর পুলিশ সুপার (এসপি) এম এম শাকিলুজ্জামানের কাছে নেতৃবৃন্দ স্মারকলিপি পেশ করেন। জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার এবিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে আশ্বস্ত করেন।
প্রসঙ্গত, ভোলা মাস্টারের বাড়ির পিছনে ইসকন মন্দির স্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু মন্দিরে যাওয়ার জন্য কোনো রাস্তা নেই। মন্দিরের সামনে দেওয়া বাড়ির সীমানা প্রাচীর ২ জুন সকালে ভেঙে ফেলা হয়। এসময় মন্দির কমিটির সভাপতি ও জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি জয়দেব কর্মকার উপস্থিত ছিলেন। পরে ওই বাড়ির পুরুষ ও নারীদের ওপর হামলা করে আহত করার অভিযোগ পাওয়া যায়। এঘটনার পরের দিন উভয়পক্ষ থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করে।
রাজবাড়ী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন বলেন, ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।