স্বামীর মৃত্যুর শোক যেতে না যেতেই স্ত্রীর পরকীয়ার কেলেংকারি হাতেনাতে ফাঁস সন্দেহ হয় স্বামী খুন।
মৃত্যুর আড়াই মাস পর কবর খুঁড়ে তোলা হলো লাশ।
আদালতের নির্দেশে ময়নাতদন্তের জন্য মৃত্যুর প্রায় আড়াই মাস পর কবর থেকে মোশারফ হোসেন মলমগীর (৫০) নামে এক ব্যক্তির লাশ উত্তোলন করা হয়েছে।
সোমবার (৬জুন) দুপুরে রাজবাড়ী সদর উপজেলার দাদশী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড এলাকার পারিবারিক কবর স্থান থেকে তার লাশ উত্তোলন করা হয়। তিনি ওই এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য ছিলেন।
জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল হুদা, সদর থানা পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে এ লাশটি তুলে তা ময়না তদন্তের জন্য রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
মামলা ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ২০২২সালের ১৪ মার্চ দিনগত মধ্যরাতে স্ট্রোকজনিত কারণে মলমগীরের মৃত্যু হলেও তা জানাজানি হয় ভোর রাতে। এরপর স্বাভাবিক মৃত্যু ভেবে ১৫মার্চ বিকেলে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। কিন্ত মলমগীরের মৃত্যুর প্রায় মাসখানেক পর ১৬এপ্রিল শনিবার সন্ধ্যায় আরিফ শেখ নামে এক যুবক নিহত মলমগীরের স্ত্রী যুথির ঘরে আপত্তিকর অবস্থায় ধরা পরে। সে সময় গ্রাসবাসীর সন্দেহ হলে তাদের দুজনকে আটক করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ গণ্যমাণ্য ব্যক্তিবর্গকে জানালে ওইসময় উপস্থিত সকলের সামনে যুথি জানায় যে আরিফ শেখ তার স্বামী। মলমগীর বেঁচে থাকা অবস্থায তাকে তালাক না দিয়ে যুখি চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি আদালতের মাধ্যমে আরিফকে বিয়ে করে।
অর্থাৎ মলমগীরের মৃত্যুর ১৫দিন আগে যুথি তার প্রথম স্বামী মলমগীরকে তালাক না দিয়ে আরিফকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। আর এর কারণেই সকলের কাছে মলমগীরের মৃত্য রহস্যজনক হয়ে ওঠে। তারা ধারণা করেন যুথি ও তার প্রেমিক আরিফ শেখ কৌশলে মলমগীর হত্যা করে তার মৃত্যুকে স্বাভাবিক মৃত্যু বলে চালিয়েছে। যার প্রেক্ষিতে ১৯এপ্রিল মঙ্গলবার দুপুরে মলমগীরের বোন আলেয়া জামান বাদী হয়ে রাজবাড়ীর বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১নং আমলী আদালতে মামলা দায়ের করেন এবং কবর থেকে লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য আবেদন করেন।
আসামীরা হলেন, নিহতের স্ত্রী যুথি আক্তার (২১) ও তার প্রেমিক শহীদ ওহাবপুর ইউনিয়নের নিমতলা গ্রামের দেলোয়ার শেখের ছেলে মো. আরিফ শেখ(২৪) দাদশী ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার শেখ বলেন, কোর্টের নির্দেশে ময়নাতদন্তের জন্য আজ কবর থেকে সাবেক ইউপি সদস্য মলমগীরের লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। প্রথমে শুনেছিলাম সে স্ট্রোক করে মারা গেছে। কিন্তু পরবর্তীতে তার স্ত্রীর পরকীয় প্রেমিক ধরা খাওয়ায় বিষয়টি সবার মধ্যে সন্দেহ তৈরি করেছে। ফলে ময়নাতদন্তের মাধ্যমে সঠিক কারণ উদঘাটন হবে। তিনি আরও বলেন, নিহতের পরিবারসহ অন্যান্য সবার মতো তিনিও মৃত্যুর সঠিক কারণ উদঘাটনের পাশাপশি প্রকৃত দোষীদের শাস্তির দাবি জানান।
রাজবাড়ী সদর থানার ওসি শাহাদত হোসেন বলেন, কোর্টের নির্দেশে থানায় নিয়মিত মামলা হয়েছে এবং মামলার পেক্ষিতে ময়নাতদন্তের জন্য আজ লাশ উত্তোলন করা হয়েছে