রাজবাড়ীতে চাঁদাবাজির মামলায় আদালতে প্রক্সি দিতে এসে কারাগারে আসা যুবক দায় স্বীকার করে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেছেন। রোববার জেল সুপারের মাধ্যমে করা আবেদন রাজবাড়ী দুই নম্বর আমলী আদালতে পাঠানো হয়েছে। পরে তা দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হয়েছে।
যুবকের নাম বিজন কুমার হালদার (৩০)। তিনি পাংশা উপজেলা পৌর শহরের পারনারায়ণপুর গ্রামের বাসিন্দা। যাঁর পরিবর্তে তিনি প্রক্সি দিতে এসেছিলেন, সেই যুবকের নাম রবিউল ইসলাম ওরফে মুন্নু।
আবেদনপত্রে বলা হয়, আমি হাজতি নম্বর ১৯১৬/২২ মুন্নু, পিতা রিহাজ মেম্বর, সাং পারনারায়নপুর, থানা পাংশা, জেলা রাজবাড়ী নাম ধারণ ঠিকানা ধারণ করে উক্ত মামলায় বিজ্ঞ আদালতে হাজিরা দেই। বিজ্ঞ আদালত আমাকে অন্তবর্তীকালীন হাজতের পরোয়ানা মূলে কারাগারে প্রেরণ করেন। প্রকৃতপক্ষে আমার নাম ঠিকানা বিজন কুমার হালদার। পলাশ নামে একজন মহুরি আমাকে উক্ত নাম ঠিকানা বলে আদালতে দাঁড়াতে বলেছিলেন। আমি পলাশ মহুরী কথায় নিজের নাম ঠিকানা গোপন করে মুন্নু নামে আদালতের সামনে হাজির হই। আমি উক্ত মামলায় না বুঝে এই রকম বিরাট বড় একটি ভুল করে ফেলেছি। উক্ত ভুলের জন্য আমি আদালতের নিকট লজ্জিত ও ক্ষমাপ্রার্থী। তবে নিচে মুন্নু নামে সই করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ১২ এপ্রিল চাঁদাবাজি ও অফিস ভাঙচুরের অভিযোগে পাংশা থানায় একটি মামলা করেছিলেন পাংশা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন বিশ্বাস। এ মামলায় উপজেলা যুবলীগের বহিষ্কৃত আহবায়ক ফজলুল হকসহ (৪০) সাতজনের নাম উল্লেখ ও তিন-চারজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। মামলার ৭ নম্বর আসামি ছিলেন পারনারায়ণপুর গ্রামের রবিউল ইসলাম। বৃহস্পতিবার রবিউলের পরিবর্তে আদালতে হাজির হন বিজন কুমার হালদার। আদালতের বিচারক জামিনের আবেদন মঞ্জুর না করে তাঁদের সবাইকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
ডেপুটি জেলার হুমায়ুন কবীর বলেন, কারাগারে থাকা যে কোনো আসামী আবেদন করতে পারেন। ওই আসামী মুন্নু হিসেবে এসেছেন। তিনি আমার সামনে মুন্নু নামে সই করেছেন। আর তিনি প্রকৃতপক্ষে মুন্নু, বিজন না অন্য কেউ তা আদালত নির্ধারণ করবেন। আদালত এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিবেন। তিনি আমার সামনেই দরখাস্ত লিখেছেন। আমি তা সত্যয়িত করেছি।
রাজবাড়ী জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁশুলি (পিপি) উজির আলী শেখ বলেন, বিজন কুমার হালদার আবেদনপত্রের মাধ্যমে মুন্নু নাম ধারণ করার কথা স্বীকার করেছেন। আমি মনে করি তাঁর এই আবেদন দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী হিসেবে প্রযোজ্য হবে। আমি আশা করবো, আদালত এই বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। আদালতের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। এটি একটি অমার্জনীয় অপরাধ। আবেদনপত্রটি ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হয়েছে।