রাজবাড়ী প্রতিনিধিঃ
রাজবাড়ী গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের দেবগ্রাম-২ নাম্বার খেয়াঘাট দখলের অভিযোগ উঠেছে। পাঁচ আগস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পরেরদিন স্থানীয় বাসিন্দা লিয়ন সরদার, মিনাল খেয়াঘাটটি দখল করে নিয়েছে বলে জানান ভুক্তভোগী শ্রী বিষ্ণু কুমার চৌধুরী।
লিয়ন সরদার উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের অন্তরমোড় গ্রামের প্রবাসী উবায়দুল সরদারের ছেলে।
বিষ্ণু কুমার বলেন, আমরা পাটনী পরিবার। আমরা তিন পুরুষধরে এই খেয়াঘাট চালিয়ে আসছি। আমার বাবা শ্রী ভগবান চৌধুরী বিগত  প্রায় ৯০বছর ধরে এই ঘাট ইজারা নিয়ে আসছে। আমার বাবা মারা যাওয়ার পর গত দেড় বছর ধরে আমি এই খেয়াঘাটের সাথে আছি। আমি কোন রাজনৈতিক দলের কোন পদ পদবীতে নেই। তবে হিন্দু বলে আমাকে আওয়ামী লীগ বলছে। পাঁচ তারিখে সরকার পতন হয়। পরেরদিন আমাকে বলে কাল থেকে আর ঘাটে আসবেন না। তারপর আমার বাড়িতে এসে হুমকি দিয়ে গেছে। আমি সংখ্যালঘু মানুষ ভয়ে আছি কোথায় অভিযোগ করিনি কিন্তু মৌখিক সবাই জানে। আমার ইজারা নেওয়ার সকল কাগজপত্র আছে। প্রতিবছর ইউনিয়ন পরিষদে টাকা দিয়ে আসি। এবারও বছরের শুরুতে টাকা পরিশোধ করেছি।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই ঘাটের মালিক ছিল ভগবান কুমার। তিনি মারা যাওয়ার পর তার ছেলে এই ঘাট চালাতো। সরকার পতনের পর  থেকে সে আর ঘাটে আসেনা। এখন লিওন, মিনাল নামে কয়েকজন এইঘাটের টাকা পয়সা নেয়।
লিয়ন সরদার বলেন, ‘ঘাট আগে ভগবান চৌধুরীর নামে ছিল। ওরা চলে যাওয়ার পরে আমি কাগজ করে নিয়ে আসছি। ওরা চেয়ারম্যানের কাছ থেকে আনছিল। আমি ডিসি অফিস থেকে কাগজ করে নিয়ে আসছি। ঘাটের কাগজ আমার নামে হলেও পোলাপান আছে, সবারই কমবেশি দিয়ে খেতে হয়।,
দেবগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজুল ইসলাম বলেন, ঘাটটি পূর্ব থেকেই পাটনি পরিবার হিসেবে ভগবান চৌধুরী খেয়ে আসছে। সে মারা গেছে এখন তার ছেলে বিষ্ণু খায়। ইউনিয়ন পরিষদে ঘাটের ইজারার টাকা জমা দিয়ে তারা ঘাট পরিচালনা করছে। ঘাট বেদখল হয়ে গেছে এমন কোন খবর আমার কাছে নেই। আমার কাছে অভিযোগ আসলে বিষয়টি দেখবো।
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র বলেন, ঘাট দখল হয়ে গেছে এই বিষয়ে আমার কাছে এখন পর্যন্ত কেউ কোন অভিযোগ করেনি। খেয়াঘাটটি একটি পাটনী পরিবারের সদস্য বিষ্ণু চৌধুরী চালায়। প্রতিবছর (বাংলা সনের) চৈত্র-বৈশাখ মাসের সকল হাট, ঘাট, জলমহাল ইজারা দেওয়া হয়। যদি কোন ঘাট ইজারা না হয়ে থাকে তাহলে এসিল্যান্ড অফিস তার খাস আদায় করবে। আজ আমি ডাকখামে একটি চিঠি দেখলাম। কেউ এটি নেওয়ার জন্য আবেদন করেছে। এই বিষয়ে আমাকে তদন্ত করার জন্য বলা হয়েছে। বছরের মাঝামাঝি সময়ে ঘাট ইজারা দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। যদি কেউ নিতে চায় তাহলে আমাদের দেওয়া ইজারা দেওয়ার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে চৈত্র মাসে। ডাকে বৈশাখ থেকে পাবে।