মোঃ ফিরোজ আহমেদ নওগাঁ জেলা প্রতিনিধিঃ

নওগাঁর আত্রাই উপজেলার হাট কালু পাড়া ইউনিয়নে কচুয়ার মাঠে সরিষার ক্ষেতগুলো ফুলে ফুলে ভরে উঠেছে। মাঠজুড়ে যত দূর চোখ যায়, তত দূর দেখা যায় হলদে রঙের সরিষা ফুল। বিশাল এ মাঠ দূর থেকে দেখতে মনে হয় বিশাল আকৃতির হলুদ চাদর বিছানো।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, এলাকার এই মাঠজুড়ে এখন সরিষার আবাদ। হলদে রঙের সমারোহে চোখজুড়িয়ে যায়। মাঠের পর মাঠজুড়ে সরিষা ফুলের নয়নাভিরাম দৃশ্যে ভরে ওঠার পালা। ফুলে ফুলে মধু আহরণে ভিড়ছে মৌমাছি।
আফজাল হোসেন জানান, ভালো ফলনের সম্ভাবনার দেখা দিচ্ছে। সবমিলিয়ে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখছেন সরিষা চাষিরা।
সাধারণত রবি মৌসুমে কার্তিকের মাঝামাঝি থেকে অগ্রহায়ণ মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত সরিষার বীজ বপনের সময়। শীতকালে ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি সরিষা ফুলে ছেয়ে থাকে চারদিক। তবে কচুয়ার মাঠে গুলোতে অগ্রীম জাতের সরিষা আবাদ করা হয়েছে। এছাড়া যে জমিতে সরিষা আবাদের পর বোরো ধানের চাষ করা হবে সেসব জমিতে আগাম সরিষা চাষ করা হয়।
নন্দলালী, বান্দাইখাড়া, শুটকি গাছা, মহাদিঘী, দিঘা,পবনডাঙা বিশাসহ বিভিন্ন স্থানে এ মৌসুমে সরিষার আবাদ লক্ষ্য করা যায়। আমন ধান ঘরে তোলার পরই কৃষকরা ওই জমিতে সরিষা চাষ করেন। ইতোমধ্যে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মাঠে সরিষার আবাদ নব্বই ভাগ শেষ হয়েছে কিছুদিন আগে। বিশেষ করে কচুয়ার মাঠ পুরোদমে ফুল ফুটতে শুরু করেছে।
কচুয়ার মাঠে সরিষাক্ষেতে গিয়ে দেখা যায়, সরিষা মাঠে ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসছে বিভিন্ন বয়সের নারী, পুরুষ, শিশুসহ বিনোদনপ্রেমীরা। হলুদ সরিষা ফুলের সাথে ছবি-সেলফি তুলছেন কেউ কেউ।
প্রকৃতিপ্রেমীদের ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়বে এসব ছবি। ছবি, ভিডিও ধারণের জন্য এসেছেন এলাকার সিরাজ উদ্দিন নামের এক যুবক। তিনি জানান,ছবি, ভিডিও সংগ্রহ করতে এসেছি। সত্যি এখানে এসে মন ভরে গেছে। মনজুড়ানো দৃশ্য। চারদিকে শুধু হলুদ আর হলুদ।
বান্দাইখাড়ার বাসিন্দা সাইফুল, আকবর, রেজাউল সহ একাধিক কৃষক জানান, এবার দ্রুত বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় আগাম চাষ করায় জমিতে সরিষা গাছে ফুল এসেছে। প্রায় সব জমিতে পুরোপুরি ফুলে ফুলে ভরে গেছে। তবে সব জমিতে সময় লাগবে ১০-১২ দিন।
তবে এ বছর সরিষাক্ষেতে ভালো ফলন হবে বলে আশাবাদী কৃষক। এখন পর্যন্ত জমিতে কোনো সমস্যা দেখা যায়নি। বরং গাছগুলো সুন্দর আর স্বাস্থ্যবান হয়ে উঠেছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার কে এম কাওছার হোসেন বলেন, গত বছর সরিষার ফলন বেশ ভালো হয়েছে। চলতি মৌসুমে উপজেলায় ২ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ করা হয়েছে। এ উপজেলার চাষিরা বারি-১৪, বারি -১৭, টরি-৭ জাতের সরিষা আবাদ করেন। বারি ১৪ জাতের সরিষা চাষে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কারণ অল্প সময় ও অধিক ফলনে জন্য কৃষকদের উৎসাহিত করা হয়েছে।
উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি অফিসার কেরামত আলী বলেন, বপন থেকে শুরু করে এ ফসল ফলনে সময় লাগে ৮৫-৯০ দিন। তবে এ উপজেলায় ৫ ভাগ কৃষক সরিষার চাষ করতে থাকে। এবার কৃষকদের আগাম চাষ করা সব জমিতে ফুল ফুটেছে। অবহাওয়া প্রতিকুল না হলে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।